রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস || রমজানের ৩০ দিনের ফজিলত জানুন
রমজানের ফজিলত
ইসলামের মৌলিক স্তম্ভ পাঁচটি। তার মধ্যে একটি হল রমজান মাসে রোজা রাখা। দ্বিতীয় হিজরিতে আল্লাহ তাআলা কুরআনের আয়াতের মাধ্যমে উম্মতের ওপর রোজা ফরজ করেছেন।
কেউ রমজানের রোজা অস্বীকার করলে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে। এছাড়াও ইচ্ছাকৃতভাবে বৈধ অজুহাত (অক্ষমতা) ছাড়া রোজা ভঙ্গ করা - মৌলিক বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করা এবং ইসলামের ভিত্তি ধ্বংস করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'যে ব্যক্তি কোনো অজুহাত বা অসুস্থতা ছাড়া রমজানে একটি রোজা ভঙ্গ করে, যদিও সে ওই রোজার পরিবর্তে সারাজীবন রোজা রাখে, তবে একটি রোজাও ক্ষতিপূরণ পাবে না।' (তিরমিযী) , হাদীসঃ ৬২৩)
রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
রমজানের ফজিলত সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহর কসম! মুসলমানদের জন্য রমজানের চেয়ে উত্তম মাস আর কখনও আসেনি, আর মুনাফিকদের জন্য রমজানের চেয়ে খারাপ মাস কখনও আসেনি। কারণ ঈমানদাররা এ মাসে (পুরো বছরের জন্য) শক্তি ও ইবাদতের পথ সংগ্রহ করে। আর মুনাফিকরা এতে মানুষের উদাসীনতা ও দোষ-ত্রুটি অন্বেষণ করে। এ মাস মুমিনদের জন্য ট্রফি এবং মুনাফিকদের জন্য ক্ষতির কারণ। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৬৩৬)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ আরও বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করতে পার। (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
রমজান মাসের ফজিলত হাদিস
রমজানের ফজিলত সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন রমজানের প্রথম রাত আসে, তখন দুষ্ট জিন ও শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়। জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়, এর একটি দরজাও খোলা হয় না এবং জান্নাতের দরজাও খোলা হয় না, এর একটি দরজাও বন্ধ হয় না। আরেকজন ঘোষক ঘোষণা করতে থাকেন: হে কল্যাণের আশা! এগিয়ে যাও হে দুর্ভাগ্যের প্রার্থী! থামুন। এ মাসের প্রতিটি রাতে আল্লাহ অসংখ্য মানুষকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করেন। (তিরমিযী, হাদীসঃ ৭২)
রমজানের ৩০ দিনের ফজিলত
১ম রমজানের ফজিলত = রোজাদারকে নবজাতকের মতো নিষ্পাপ করা হয়।
২য় রমজানের ফজিলত = রোজাদারের পিতা-মাতাকে ক্ষমা করা হয়।
৩য় রমজানের ফজিলত = একজন ফেরেশতা আবার রোজা মাফের ঘোষণা দেন।
৪র্থ রমজানের ফজিলত = রোজাদারকে চারটি আসমানী কিতাবের অক্ষরের সমান সওয়াব দেওয়া হয়।
৫ই রমজানের ফজিলত = মক্কা নগরীর মসজিদে হারামে নামাজ পড়ার সওয়াব পাওয়া যায়।
৬ষ্ঠ রমজানের ফজিলত = ফেরেশতাদের নিয়ে সপ্তম আসমানে বায়তুল মামুর প্রদক্ষিণ করার সওয়াব দেওয়া হয়।
৭ই রমজানের ফজিলত = হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর মতো রোজাদারের ওপর রহমত বর্ষিত হয়।
৮ই রমজানের ফজিলত = ফেরাউনের বিরুদ্ধে মুসা (আ.)-কে সহযোগিতা করার জন্য একই পুরস্কার দেওয়া হয়।
৯ম রমজানের ফজিলত = নবী - রাসূলদের সাথে দাঁড়ালে ইবাদতের সমান সওয়াব পাওয়া যায়।
১০ম রমজানের ফজিলত = রোজা রাখলে উভয় জাহানের কল্যাণ হয়।
১১তম রমজানের ফজিলত = একজন রোজাদারের মৃত্যু নবজাতকের মতো নির্দোষ হিসাবে নিশ্চিত করা হয়।
১২তম রমজানের ফজিলত = কিয়ামতের দিন রোজাদারের মুখমন্ডল পূর্ণিমার চাঁদের মত উজ্জ্বল হবে।
১৩তম রমজানের ফজিলত = কেয়ামতের স্থল সকল বিপদ থেকে রক্ষা করা হবে।
১৪তম রমজানের ফজিলত = হাশরের দিনে হিসাব সহজ করা হবে।
১৫তম রমজানের ফজিলত = সমস্ত ফেরেশতা রোজা রাখার জন্য প্রার্থনা করে।
১৬তম রমজানের ফজিলত = আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালা) রোজাদারকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দেন।
১৭ তম রমজানের ফজিলত = এক দিনের জন্য নবীকে সমান সওয়াব দেওয়া হবে।
১৮তম রমজানের ফজিলত = রোজাদার এবং তার পিতামাতাকে আল্লাহর সন্তুষ্টির সংবাদ দেওয়া হয়।
১৯তম রমজানের ফজিলত = বিশ্বের সমস্ত পাথর-নুড়ি রোজা রাখার জন্য প্রার্থনা শুরু করে।
২০তম রমজানের ফজিলত = আল্লাহর পথে জীবনদানকারী শহীদদের সমান পুরস্কার দেওয়া হয়।
২১তম রমজানের ফজিলত = রোজাদারের জন্য জান্নাতে একটি মহিমান্বিত প্রাসাদ তৈরি করা হয়।
২২তম রমজানের ফজিলত = বিচার দিবসে সমস্ত দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি।
২৩তম রমজানের ফজিলত = জান্নাতে রোজাদারদের জন্য একটি শহর তৈরি করা হয়েছিল।
২৪তম রমজানের ফজিলত = যেকোন 24টি রোযার নামাজ কবুল হয়।
২৫ রমজানের ফজিলত = কবরের আযাব চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
২৬তম রমজানের ফজিলত = ৪০ বছর ইবাদতের সমান সওয়াব পাওয়া যায়।
২৭তম রমজানের ফজিলত = পলসিরাত চোখের পলকে চলে যায়।
২৮তম রমজানের ফজিলত = জান্নাতের নিয়ামত দ্বিগুণ হয়।
২৯তম রমজানের ফজিলত = 1000 কাবুল হুজ্জার সওয়াব।
৩০তম রমজানের ফজিলত = পুরো মাসের ফজিলত দ্বিগুণ।